নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ থানা এলাকায় চলছে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ও বর্ধিত চুলার রমরমা বাণিজ্য। অবৈধ গ্যাস সংযোগের ভয়াবহতা ঠেকাতে ইতোমধ্যে সোনারগাঁ তিতাস কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে কয়েক দফায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের বাসা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। শুধু তাই নয় সোনারগাঁ যেখানেই অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে সেখানেই অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় ও জরিমানা করা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁ আঞ্চলিক কার্যালয় ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে শিকদার ডাইন নামক রেস্টুরেন্ট মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে না হতেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ও টাকার বিনিময়ে
পুনরায় আবার অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়। আর এসব সংযোগ মিলছে টাকার বিনিময়ে। আবার একই সঙ্গে চলছে চুলা বর্ধিত করণের হিড়িকও যেন এক ধরনের চোর পুলিশ খেলা।
এ সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে স্থানীয় দালাল চক্রসহ কথিত একটি ঠিকাদার চক্রের সঙ্গে জড়িত আছেন তিতাসের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, তিতাস কর্তৃপক্ষের অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযানে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা কলাপাতা রেস্টুরেন্ট, সিকদার ডাইন, আদি মিষ্টি ভুবন, মিষ্টি ভান্ডার সহ সোনারগাঁ রোড এলাকায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাইজার খুলে নেওয়া হয়েছে।
এরপর তিতাস অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে রাতের অন্ধকারে এ চক্রটি রাইজার সংগ্রহ করে পুনরায় সংযোগ দেয়। এসব সংযোগের ক্ষেত্রে নেওয়া হয় ৭০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। আবার চক্রটি প্রতি মাসে বিলের নামে অবৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এদিকে এক ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভাবে ফায়দা নিচ্ছে শিকদার-দাইন রেস্টুরেন্ট।
এ প্রতিষ্ঠানের মালিক মোতাহার মাসুম গং অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে রাতারাতি বনে গেছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। এদের নামে বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পদ। সরকারি খনিজ সম্পদ এভাবে লুটপাট করে নিজেদের আখের গোছালো। শুধু তাই নয় জানা যায়, মোতাহার মাসুমের অডেল সম্পদ রয়েছে মালয়েশিয়ায়। দেশের সম্পদ নষ্ট করে অবৈধভাবে ব্যবহার করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে বিদেশে পাচার করছে দেশের অর্থ।
এ প্রতিষ্ঠানটি এখনো অবৈধ সংযোগ ও বর্ধিত চুলা দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা বাণিজ্য।
এ বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ জানা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না দুঃখ জনক। আর এসব অবৈধদের ভিড়ে আমাদের বৈধ গ্রাহকদের চুলা জ্বলে না অথচ মাস শেষে ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দিতে হচ্ছে খুব কষ্টে আছি।
অপরদিকে অন্য আরেক জন জানান, এলাকায় দালাল চক্রের মাধ্যমে চলছে অবৈধ সংযোগের ভয়ংকর কারবার এখানে একেকটি রাইজার থেকে ৪-৫টি বহুতল ভবনে অবৈধ চুলা জ্বলে। গ্যাস অফিসের লোকজন একদিকে কাটে অন্যদিকে দালালরা টাকা নিয়া সংযোগ দিয়ে দেয়। এটা তো নতুন কিছুই না হরহামেশাই চলছে। পূর্বে সিকদার ডাইনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও অধরা রয়েছে অবৈধ নকশা বহির্ভুত সিড়ি।সিকদার ডাইনের মালিক মোতাহার মাসুম শুধু অবৈধ গ্যাস লাইন নয়, গ্যাস চুরির অভ্যাসে রয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস সোনারগাঁ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহা ব্যবস্থাপক সুরুজ আলম জানান, কোন জায়গায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরেও যদি সংযোগ দেওয়া হয় তাহলে আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন সহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমাদের কোন কর্মকর্তা যদি জড়িত থাকে তাদেরকে সেখানেই বন্দী করে আইনের আশ্রয় নিবেন।